প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ্রগ্রহণে ১৪২৯ বাংলা বর্ষবরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৯ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে বর্ষবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণ বৈশাখী আল্পনা, নববর্ষের সাজসজ্জসহ বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত করা হয়। গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মদ ও তার সহধর্মিণী রেবেকা সুলতানা, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এদিন বিকেল ৩টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে বর্ষবরণ মেলার উদ্বোধন করেন।
কয়েকশত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে নতুন বছরে বর্ণিল সাজে সজ্জিত ব্যানার, ফেস্টুন, মুখোশ পরে আয়োজিত বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা সবার আগ্রহ ও দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে লোকজ ও বৈশাখী পোশাকে সজ্জিত শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুদের আগমনে কলকাকলিতে মুখরিত হয় দূতাবাস এবং সৃষ্টি হয় এক বর্ণিল মনোরম পরিবেশের। মেলায় আগমনকারীরা বিভিন্ন স্টল থেকে বাংলাদেশি পণ্য ক্রয় করেন এবং বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ নেন।
বৈশাখী আবহে স্টলসহ দূতাবাস প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ। প্রবাসীরা তাদের স্টলসমূহে বাংলাদেশি খাবার, তৈজসপত্র, হস্তশিল্প, শাড়ি, মনোহরি দ্রব্য, অলংকার সামগ্রী ও আল্পনা সহকারে বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তোলেন।
পাশাপাশি গ্রিক ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ও বঙ্গবন্ধুর মহতী জীবন ও কর্মের ওপর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থের প্রদর্শনীর জন্য মেলায় দূতাবাস স্টল স্থাপন করা হয়।
‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানটি সম্মিলিত কণ্ঠে পরিবেশনার মাধ্যমে এ বছর নতুন বছরকে বরণ করে নেন সকলে। মনোজ্ঞ বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সদস্যরা, গ্রিসের বাংলাদেশ দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পী এবং শিশু-কিশোররা বৈশাখী ও লোকজ সংগীত, কবিতা, নৃত্য ইত্যাদি পরিবেশন করেন।
এর আগে, রাষ্ট্রদূত স্বাগত বক্তব্যে দূতাবাসের আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি সম্প্রতি গ্রিক সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির আওতায় সংস্কৃতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে দু’ দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দূতাবাস আয়োজিত এই বর্ষবরণ উৎসব গ্রিস প্রবাসীদের মধ্যে বিপুল আনন্দ-উদ্দীপনার সঞ্চার করে এবং প্রবাসে এরকম সর্বজনীন বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় করবে বলে অংশগ্রহণকারীরা মত প্রকাশ করেন।